প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয় সৌদি আরব। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও এই সুযোগ পেয়ে থাকেন। দেশটির নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বর্তমানে পড়াশোনা করছেন।
সৌদি আরবে পড়াশোনার জন্য প্রথমে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হতে হয়। ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে সন্তোষজনক ফল অর্জিত হলে স্নাতক কোর্সে ভর্তির সুযোগ পাওয়া যায়।
সৌদি আরবের শিক্ষাব্যবস্থা মূলত কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক। দেশটিতে সব ধরনের শিক্ষা অবৈতনিক। সব শিক্ষা উপকরণ বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়। মক্কা নগর থেকে কিছুদূরে উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। এখানে ইসলামি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়ও পড়ানো হয়। আধুনিক ক্লাসরুম, সুপরিসর ক্যাম্পাস, অত্যাধুনিক লাইব্রেরি ও ল্যাবরেটরি, উন্নত হোস্টেল ব্যবস্থাপনা এবং গবেষণা উপযোগী সুন্দর পরিবেশের কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ পছন্দের।
সৌদি আরবের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের শুরুতে ডিপ্লোমা ইন অ্যারাবিকে আবেদন করতে হয়। এই ডিপ্লোমা শেষে স্নাতক কোর্স শুরু করতে হয়। সৌদি আরবের যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়, তার সবগুলোতেই আরবি ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউট রয়েছে। যাঁদের মাতৃভাষা আরবি নয়, তাঁদের এই ইনস্টিটিউটে অত্যন্ত যত্ন সহকারে শুদ্ধ আরবি শেখানো হয়। বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এই ইনস্টিটিউটে পড়ে পরে শরিয়াতে স্নাতক-স্নাতকোত্তর করার অনেক উদাহরণ আছে।
সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ও ইসলামী বিষয়ে (শরিয়াহ, দাওয়া ও ইসলামিক স্টাডিজ) স্নাতক পুরোপুরি আরবি মাধ্যমে পড়ানো হয়। তাই এই ডিপ্লোমা-ইন-অ্যারাবিক ছাড়া আরবি বিষয়ে ভালো করা খুবই কঠিন। যদিও অন্য সব বিষয়ে স্নাতক কোর্স ইংরেজিতে পড়ানো হয়। বিজ্ঞান বা বাণিজ্য যে বিষয়েই পড়াশোনা করেন না কেন, সবাইকে আরবি ও ইসলাম শিক্ষার বেসিক বিষয় পড়তে হবেই।
চার লেভেলের ডিপ্লোমা-ইন-অ্যারাবিক শেষ করতে মোট দুই বছর সময় লাগে। যাঁদের আরবি দক্ষতা ভালো, তাঁরা সরাসরি দুই বা তিন লেভেল থেকে শুরু করতে পারবেন। এতে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ডিপ্লোমা শেষ করে স্নাতক কোর্স শুরু করা যায়। মূলত এ কারণেই সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সরাসরি স্নাতকে আবেদনের সুযোগ নেই।