৩ জুন (সোমবার) পাবনার দাশুড়িয়া থেকে লিচু কিনে সিরাজগঞ্জ আসার পথে দুই লিচু ব্যাবসায়ীকে উল্লাপাড়ার বোয়ালিয়া বাজার এলাকায় হাত-পা ও চোখ বাঁধা অবস্থায় রাস্তার পাশে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নাটোর গুরুদাসপুরের তালবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আব্দুল গফফার (৬৫) নামের এক লিচু ব্যাবসায়ী মৃত্যুবরণ করেন ও অপর ব্যাবসায়ী হেলাল সেখ (৩৬) গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় আহত হেলাল সেখ গত ৫ জুন উল্লাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করলে মামলার ছায়া তদন্তে নামে র্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)-১২।
এরই ধারাবাহিকতায় ৭ জুন (শুক্রবার) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-১২ এর অধিনায়ক মোঃ মারুফ হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, লিচু ব্যাবসায়ী হত্যার ঘটনাটি সারা দেশজুরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এরই প্রেক্ষিতে গত ৬ জুন রাত আড়াইটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১২’র সদর কোম্পানির আভিযানিক দল র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ৬ জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং প্রাথমিকভাবে আসামীরা ঘটনার স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো, নাটোর জেলার সাতুরিয়া গ্রামের মোঃ ফজলুর রহমানের ছেলে সাইদুর রহমান (২৮), গাজীপুর গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ আজিজুল হক (৪৮), কাঠাল বাড়িয়া গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল হক (৪৫), বড় বাড়িয়া গ্রামের সামছু মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান (৪৩), ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার বিটিবাড়ী গ্রামের পিতা- মোঃ আলী হোসেনের ছেলে মোঃ উজ্জল হোসেন (৩৪) ও টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানার কুটিবাড়ী চাঁনপুর গ্রামের -মোঃ আব্দুল জলিলের ছেলে মোঃ সুজন মিয়া (২৯)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মোঃ হেলাল শেখ একজন লিচু ব্যবসায়ী। সোমবার (৩ জুন) তিনি পাবনা জেলার দাশুড়িয়া এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে লিচু কিনে অজ্ঞাতনামা আরেকজন লিচু ব্যবসায়ী (আব্দুল গফফার) এর সাথে একটি ট্রাকযোগে (যার রেজি নং যশোর-ট-১১-২৬২৯) সিরাজগঞ্জের দিকে আসছিলেন। ট্রাকে তারা দুইজন ছাড়াও আরও ৬/৭ জন ব্যক্তি ছিল এবং তারা নিজেদেরকে গরু ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেয়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নাটোর জেলার কাঁচিকাটা টোলপ্লাজা পার হওয়ার পর ৬/৭ জন সঙ্গবদ্ধ ভাবে হত্যা ও মালামাল লুটের উদ্দেশ্যে দুজন লিচু ব্যাবসায়ীকে হাত-পা বেঁধে এলোপাতারিভাবে মারপিট করে গুরুতর জখম করে। তারপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বোয়ালিয়া এলাকায় ওই দুই ব্যাবসায়ীকে হাত-পা ও চোখ বাঁধা অবস্থায় রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। আহতাবস্থায় হেলাল সেখের ডাকাডাকি ও চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে দুইজনকে উদ্ধার করে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে আরেক লিচু ব্যাবসায়ী আব্দুল গফফারকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে উল্লাপাড়া থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।