পরীক্ষায় ভালো করার জন্য বারবার রিভিশনের বিকল্প নেই। কারণ, পরীক্ষায় অনেক বিষয়বস্তু মনে রাখতে হয়। সংজ্ঞা মনে রাখতে হয়, সূত্র মনে রাখতে হয়।
অনেক রকমের তথ্যও মনে রাখতে হয়। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে এসব তথ্য কাজে লাগতে পারে। আর মনে রাখার জন্য চাই বারবার পড়া। বারবার দেখে দেখে পড়া মনে থাকবে বেশি।
ভালো ফল অর্জনের জন্য সব বিষয়েই খুব ভালো করতে হবে। দেখা যায়, অনেক শিক্ষার্থী গণিত, ইংরেজি বা বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে জোর দিতে গিয়ে অন্য বিষয়ে সময় কম দেয়। এতে কিছু বিষয়ে আশানুরূপ ফল লাভ করতে পারে না। এ জন্য যে যে বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, সব বিষয়েই সমান গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
এটা নিশ্চয় তোমাদের জানা আছে, রুটিন করে পড়ার মাধ্যমে নিয়মিত অনুশীলন হয়ে থাকে। সব শিক্ষার্থীর অবশ্যই রুটিন থাকা উচিত। সামনের দুই সপ্তাহের জন্য একটা রুটিন বানিয়ে নিতে পারো। মনে রাখবে, প্রতিদিন যেন সব বিষয়ের পড়া অন্তর্ভুক্ত থাকে।
একটি রুটিন, পড়ার অনুশীলনের শৃঙ্খলা বজায় রাখে। আবার শুধু রুটিন তৈরি করে টেবিলের সামনে ঝুলিয়ে রাখলেই হবে না, তা কঠোরভাবে অনুসরণও করতে হবে।
গণিতের কথা আলাদা বলছি কেন? শোনো, গণিতকে বলা হয় যুক্তির বিজ্ঞান। একটি গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে গেলে প্রতিটি ধাপে একেকটি কারণ থাকে। সেগুলো কখনো কখনো পার্শ্বটীকা (সাইড নোট) আকারে লিখতেও হয়।
কোনো ধাপ যাতে বাদ না পড়ে, সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। অনুশীলন করার সময় বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার। জ্যামিতির সাধারণ নির্বাচনও কিন্তু একধরনের সূত্র। সাধারণ নির্বাচন অনেক উপপাদ্য বা উপপাদ্যের অনুশীলনী প্রমাণ করার জন্য কাজে লাগে, তাই সেগুলো মনে রাখা জরুরি।
পরীক্ষায় ভালো করার জন্য দরকারি কোনো বিষয় খাতায় নোট করে করে রাখো। পরীক্ষায় অনেক বিষয়বস্তু মনে রাখতে হয়। সংজ্ঞা মনে রাখতে হয়, সূত্র মনে রাখতে হয়।
এ কথা অনস্বীকার্য যে সব ক্ষেত্রে নির্ভুল বানান থাকা চাই। বানানের নির্ভুলতা প্রতিটি বিষয়ে বেশি নম্বর পেতে সহায়তা করে।
একজন পরীক্ষক যখন পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্রে ভুল বানান দেখতে পান, তখন কিছুটা বিরক্ত হতে পারেন। শুধু বাংলা বা ইংরেজি নয়, সব বিষয়েই নির্ভুল বানান লেখার চর্চা করা উচিত। শব্দের দিকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলেই কিন্তু শুদ্ধ বানান মাথায় গাঁথা হয়ে যায়।
প্রায় প্রতিটি বিষয়ে কোনা কোনো বিষয়বস্তুর সংজ্ঞা আছে। সংজ্ঞাগুলো একদম নির্ভুল হওয়া চাই। কোনো কোনো শিক্ষার্থী মনের মতো সংজ্ঞা বানায়। এতে নম্বর তো পাওয়া যায়–ই না, বরং পরীক্ষকও বিরক্ত হতে পারেন।
পাঠ্যবইয়ে যেভাবে সংজ্ঞাগুলো দেওয়া আছে, সেভাবে হুবহু মনে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে বারবার সংজ্ঞাগুলো পড়ার কোনো বিকল্প নেই।
পরীক্ষায় ভালো করার জন্য দরকারি কোনো বিষয় খাতায় নোট করে করে রাখো। কারণ, পরীক্ষায় অনেক বিষয়বস্তু মনে রাখতে হয়। সংজ্ঞা মনে রাখতে হয়, সূত্র মনে রাখতে হয়। অনেক রকমের তথ্যও মনে রাখতে হয়।
বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে এসব তথ্য কাজে লাগতে পারে। আর মনে রাখার জন্য চাই বারবার পড়া। বারবার দেখে দেখে পড়া মনে থাকবে বেশি।
স্বাস্থ্য ঠিক তো সব ঠিক। স্বাস্থ্য যদি ঠিক না থাকে অথবা শরীর অসুস্থ থাকলে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা যায় না।
চলাফেরায় সাবধান হবে। পরিমিত ঘুমও প্রয়োজন। বাইরে খুব একটা বের হবে না। তারপরও একান্ত বের হতে হলে মুখে মাস্ক পরবে। মাস্ক করোনা ছাড়াও ধুলাবালু থেকে রক্ষা করে।
করোনার সময় তোমাদের হাতে মুঠোফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি শোভা পেয়েছিল। আমি একান্তভাবে বলি, এখন থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুঠোফোন বা এ–জাতীয় অন্য কোনো ডিভাইস থেকে নিজেকে দূরে রাখবে।
পরীক্ষায় ভালো করার জন্য এটা করতেই হবে। মানবে তো?
তোমাদের পরীক্ষা অনেক দিন পরে হচ্ছে। তাই তোমাদের লেখালেখিতে জড়তা আসতে পারে। সে জন্য প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখে তোমার হাতের জড়তা কাটিয়ে নাও। এতে পরীক্ষার সময় উপকার হবে।
গণিতে উপপাদ্যে, সম্পাদ্যে চিত্র এঁকে অনুশীলন করো। জীববিজ্ঞানে চিত্র, ভূগোল এবং পরিবেশে মানচিত্র ও অন্যান্য চিত্র এঁকে হাতের কাজ ঠিক করে নাও। পরীক্ষার সময় আঁকাআঁকিতে সময় কম লাগবে।
পরিমিত সুষম খাদ্য একজন মানুষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এ জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করবে। মুখরোচক অন্য কোনো খাবার, যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, সেগুলো গ্রহণ করা থেকে দূরে থাকবে। সময়মতো খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
সন্তানের পরীক্ষা সামনে এলে অভিভাবকেরা অনেক চিন্তা করেন। কোনো কোনো অভিভাবক সন্তানের অধিক খোঁজখবর রাখেন, আবার কেউ কেউ কম রাখেন। আমি অনুরোধ জানাচ্ছি, আপনারা নিজেদের প্রিয় সন্তানকে একটু সময় দিন। খেয়াল রাখুন, সে মুঠোফোন বা অন্য
কোনো ডিভাইসে আসক্ত হচ্ছে কি না। পরীক্ষার মাসটায় মুঠোফোন মোটেই দেবেন না। তাকে বুঝিয়ে বলুন। অহেতুক জোর খাটাবেন না। অনুপ্রেরণামূলক কথার মাধ্যমে তার মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনুন।