তিন দিন বন্ধ রাখার পর শনিবার থেকে নর্ড স্ট্রিম–১ গ্যাস পাইপলাইনে আবারও সরবরাহ শুরুর কথা থাকলেও তা শুরু করতে পারছে না রাশিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গাজপ্রম বলেছে, পাইপলাইনের একটি টারবাইন থেকে তেল চুইয়ে পড়ার কারণে এমন অবস্থা হয়েছে। এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য এ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। খবর বিবিসির
রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য গত তিন দিন পাইপলাইনটি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল গাজপ্রম। কাজ শেষে তা শনিবার থেকে খুলে দেওয়ার কথা ছিল।
রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ উপকূলের কাছ থেকে গ্যাস পাইপলাইনটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জার্মানির দিকে গেছে। এ পাইপলাইন দিয়ে দিনে ১ হাজার ৭০০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ করা হতো। এ পাইপলাইনের মালিক ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নর্ড স্ট্রিম এজি। গাজপ্রম এখানকার অন্যতম শেয়ারহোল্ডার।
গাজপ্রম বলছে, পোর্তভায়া কমপ্রেশর স্টেশনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। টারবাইনটির তত্ত্বাবধানকারী জার্মান প্রতিষ্ঠান সিমেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা বলছেন, বিশেষায়িত কারখানায় নিয়ে গেলেই কেবল মূল ওই ইঞ্জিন থেকে তেল চুইয়ে পড়া বন্ধ করা যাবে। তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব কারখানায় যাওয়া যাচ্ছে না।
ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর নর্ড স্ট্রিম–১ পাইপলাইনে সরবরাহ বন্ধ হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। জুলাইয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গাজপ্রম ১০ দিনের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল। ১০ দিন পর সরবরাহ শুরু হলেও সরবরাহের মাত্রা কম ছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো আগামী শীতে ঘরবাড়ি উষ্ণ রাখার খরচ মেটাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ার মধ্যেই নর্ড স্ট্রিম–১–এ সরবরাহ শুরু না হওয়ার খবর এল।
ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে জ্বালানির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে নতুন করে সরবরাহে ঘাটতি হলে খরচ আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল ইউরোপ।
ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর অর্থায়ন কমানোর চেষ্টায় রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে ইউরোপ। তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বদলা হিসেবে জ্বালানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মস্কো।
জি–৭–ভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার তেল আমদানিতে ন্যূনতম একটি দাম বেঁধে দেওয়ার ব্যাপারে একমত হওয়ার পর পরই নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে সরবরাহ শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছে রাশিয়া। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, রাশিয়ার তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য ওই নির্দিষ্ট দামের মধ্যে বিক্রি হলে এবং তা সাগরপথে পাঠানো হলেই কেবল তা কেনা যাবে।
তবে রাশিয়া বলেছে, ন্যূনতম দাম নির্ধারণের ব্যাপারে একজোট হওয়া দেশগুলোয় তারা রপ্তানি করবে না। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান—এই সাত দেশের সমন্বয়ে জি–৭ গঠিত।