অক্টোবরে উৎপাদনে আসছে বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে আগামী বছরের শুরুতে। তবে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিবেশের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, আর তার সুরক্ষায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা নিয়েও কথা বলেছেন প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডে। প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে আনা মানসম্পন্ন কয়লা নিরাপদভাবে ঢেকে পরিবহন করার সব ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। পরিবেশের ওপর, বিশেষ করে সুন্দরবনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেটি এই প্রকল্পে নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা কয়লা দিয়ে পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে এখন। চারটি কোল ডোম্বের মধ্যে একটি শতভাগ প্রস্তুত, বাকিগুলোর কাজও চলমান। কয়লা খালাসে তৈরি হয়েছে জেটি। জাহাজ থেকে কয়লা আবৃত অবস্থায় চলে যাচ্ছে সেই কোল ডোম্বে।
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডে বলেন, প্রথম ইউনিটের যন্ত্রপাতি এক দফা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ। এ সপ্তাহে আরেকবার তা করা হবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে। অক্টোবরে এটি পুরোপুরি চালু করা সম্ভব। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও এগিয়ে চলেছে। আগামী বছর মার্চের মধ্যে সেটি চালু হবে।
ভারতের পাশাপাশি জার্মানি থেকে আনা যন্ত্রপাতি দিয়ে সর্বাধুনিক এই কেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে দাবি করে প্রকল্প পরিচালক বলছেন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ যেসব দেশ থেকে পাবো, কয়লা আনা হবে। গভীর সমুদ্রে বড় বার্জ থেকে জেটি, সেখান থেকে কেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত কয়লার নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব পরিবহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিবেশের সুরক্ষায় এই অঞ্চলের সবচেয়ে উঁচু চিমনি তৈরি করা হয়েছে রামপালে।
সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বাস্তবায়িত রামপাল প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে অনেক শঙ্কা পরিবেশবাদীদের। দায়িত্বশীলরা বলছেন, পৃথিবীর সবচএয় বড় ম্যানগ্রোভ বনের সুরক্ষা নিশ্চিতে নেয়া হয়েছে সব ধরনের উদ্যোগ। পরিবেশ অধিদফতর ২৪ ঘণ্টা এটি পর্যবেক্ষণ করার কথা।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, পরিবেশগত দিক থেকে রামপাল একটা বিশেষ ধরনের প্রকল্প। এর একেবারে ডিজাইন থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা মনে করি, পরবর্তী দশ বছর নয়, ৫০ বছরেও এখানকার পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে না। ভালো প্রতিষ্ঠান দিয়ে আমরা জরিপ করেছি, এটা চলমান থাকবে। ক্ষতিকর কিছু হলে তো ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে।
বিশ্ববাজার অস্থির হওয়ায় উৎপাদন খরচ কত হবে, তা বলতে না পারলেও তেল বা গ্যাস দিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুতের চেয়ে কমই থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন প্রকল্প পরিচালক।
প্রতিবেশী দুই দেশের সমান মালিকানায় গঠিত বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি বাস্তবায়ন করছে রামপাল তাপবিদ্যুতের মেগা প্রকল্প। ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিটের প্রথমটির কাজ শেষ। আগস্টের মাঝামাঝি পরীক্ষামূলকভাবে ৯১ মেগাওয়াট উৎপাদন করে তা দেয়া হয়েছে গ্রিডে।